বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যায় যারা জড়িত তাদের একচুল ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘শুধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নই, একজন মা হিসেবে এ হত্যার বিচার করব।
Courtesy: www.dhakatribune.com |
এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি। জড়িতদের ধরা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি। তার পরও কীসের আন্দোলন? আমি তো ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিএনপি আমলে মেধাবী শিক্ষার্থী সাবিকুন নাহার সনি হত্যার বিচার তো হয়নি। ছাত্রদের মিছিল পর্যন্ত পুলিশ করতে দেয়নি। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি তো দল দেখিনি? বিভিন্ন জন বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।’ গত রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ছাত্রলীগ নেতাদের অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
উপস্থিত নেতারা জানান, বুয়েটের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী খুবই মর্মাহত। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বিমর্ষ দেখা যায়।
বৈঠকসূত্র জানায়, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় মর্মাহত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ও তো বাচ্চা ছেলে, ২১ বছরের ছেলে। ওর ভিন্নমত থাকতেই পারে। তাই ওকে এমন নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে? যারা মেরেছে তারাও তো একই ক্লাসে পড়ে? কীভাবে এটা সম্ভব? বন্ধু হয়ে বন্ধুকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে? একটু মায়া লাগেনি? ও (আরবাব) মোংলা বন্দরের কথা বলেছে, আসলে সে সময় তো মোংলা বন্দর ছিল না। এটা ছিল চালনা বন্দর নামে আরেকটি জায়গা। ও ছোট মানুষ। ওর ভিন্নমত থাকতেই পারে। কিন্তু এভাবে মারতে হবে?
Courtesy: en.banglatribune.com |
এটা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। সর্বোচ্চ শাস্তি পেতেই হবে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ভারত নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে। আগামীকাল (বুধবার) আমি সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরব। কী পেলাম আর কী দিয়ে এলাম তা জাতিকে জানাব।’
বুয়েটের ঘটনা নিয়ে কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, কাদের নির্দেশনায় এটা হয়েছে সব খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমি দেশটাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি। এমন সময় নানারকম ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন নানারকম উসকানি দেবে। কিন্তু ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই হত্যার ঘটনা ঘটল সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। অনেকে আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। আমি ফুটেজগুলো সংরক্ষণ করতে বলেছি। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। নিজ দলের বলে কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। তার পরও কিছু মানুষ ও কিছু সংগঠন আছে, যারা সরকারের ভালো কিছু চোখেই দেখে না। সব সময় তারা নেগেটিভই খুঁজে পায়।’
বুয়েটের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলামের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উনি কেমন ভিসি? একটা ছাত্র মারা গেল, আর উনি এতটা সময় বাইরে ছিলেন! ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ভিসির ক্যাম্পাসে যাওয়া উচিত ছিল। তার জানাজায় অংশ নেওয়া উচিত ছিল।’
Courtesy: www.bd-pratidin.com
No comments:
Post a Comment