মাড়ি রোগে সতর্কতা
ডা. মো. ফারুক হোসেন
মাড়ি রোগ প্রকট আকার ধারণ করলে অর্থাৎ মারাত্মক মাড়ি রোগের সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস অথবা স্ট্রোকের মতো রোগের যোগসূত্র থাকতে পারে।
পেরিওডন্টাল রোগ সার্বিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে।
পেরিওডন্টাইটিসের কারণে পেরিওডন্টাল পকেট সৃষ্টি হতে পারে। এর মাধ্যমে হৃদরোগ দেখা দিতে পারে। কারণ সংক্রমিত পেরিওডন্টাল পকেট ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য টক্সিনকে সংক্রমণ ও বিস্তার লাভ করতে দেয়।
Courtesy: m.dailyinqilab.com |
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে, পেরিওডন্টাল রোগে যে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় বা দেখা যায় তার মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কাস স্যানগুইস বা স্যানগুইনিস হার্টে সংক্রমিত হয়ে থাকে এবং এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াল এন্ডোকার্ডাইটিস দেখা দিতে পারে।
স্ট্রেপটোকক্কাস ভিরিড্যানস ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্ট্রেপটোকক্কাস স্যানগুইনিস যা সুস্থ মানুষের মুখে বিদ্যমান, বিশেষ করে ডেন্টাল প্ল্যাকে। স্ট্রেপটোকক্কাস ভিরিড্যানস ব্যাকটেরিয়ার কারণে ব্যাকটেরিয়াল এন্ডোকার্ডাইটিস হতে পারে।
যদি চিকিৎসা না করা হয় তাহলে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেয়ে হার্টের ভালব পর্যন্ত নষ্ট করে ফেলতে পারে।
স্ট্রেপটোকক্কাস স্যানগুইনিস সাধারণত পেরিওডন্টাল রোগ সৃষ্টি করে থাকে।
ভিরিড্যানস গ্রুপের স্ট্রেপটোকক্কাই দ্বারা প্রায়ই সাবএকুউট এন্ডোকার্ডাইটিসও হয়ে থাকে।
ভিরিড্যানস গ্রুপের মধ্যে রয়েছে স্ট্রেপটোকক্কাস স্যানগুইস, মিউট্যানস, মাইটিস অথবা মিলেরিয়া যা স্বাভাবিকভাবে মুখে ও গলায় বাস করে থাকে।
মাড়ি রোগের ক্ষেত্রে অর্থাৎ পেরিওডন্টাল রোগের ক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন হতে হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
দাঁত নড়া অবস্থায় রোগী ডাক্তারের কাছে এলে সাধারণত ধরে নেয়া হয় যে, পেরিওডন্টাইটিসের কারণে দাঁত নড়ে গেছে।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে, মাড়ির পাশে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা বা ক্যান্সার হলেও একটি বা দুটি দাঁত নড়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাড়ি রোগের দিকে খেয়াল না করে দাঁত ফেলে দিলে খুব দ্রুত ক্যান্সার কোষ শরীরে বিস্তার লাভ করতে পারে। ফলে ক্যান্সারের স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যাহত হয় এবং সহজ চিকিৎসা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার ছাড়া অনেক সময় মুখের অভ্যন্তরে রক্তনালির টিউমার হেমানজিওমা হলেও দাঁত নড়ে যেতে পারে। সে সব ক্ষেত্রে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে দাঁত ফেলে দিলে বড় ধরনের সমস্যা যেমন-অঝোর ধারায় রক্তপাত হতে পারে, যে কারণে জীবন বিপন্ন হতে পারে।
মোট কথা টিউমার, সিস্ট এবং অন্য কারণেও দাঁত নড়ে যেতে পারে।
পেরিওডন্টাল রোগের ক্ষেত্রে যদি সি রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন বেশি থাকে তাহলে ভবিষ্যতে ওই রোগীর হৃদরোগের সম্ভাবনা বেশি বা হতে পারে।
মাড়ি রোগ বা মাড়ির পাশে আলসার বা ঘাঁ দেখা দিলে নিজে নিজের চিকিৎসা না করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
No comments:
Post a Comment